সায়মা ওয়াজেদকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগাযোগ করতে চায় সরকার

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বাদ দিয়ে সংস্থাটির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে চায় বাংলাদেশ।
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর এ কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার দিনের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ডব্লিউএইচওর (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) কাছে একটি চিঠি দিয়েছে, যে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যাতে বাংলাদেশ সরাসরি ডব্লিউএইচওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে এবং পরিচালকের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে না হয়।”
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক। তিনি ভারতের নয়াদিল্লীতে অফিস করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একাধিক মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে।
সরকারের অবস্থান তুলে ধরে অপূর্ব বলেন, “সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এখন আমাদের জন্য অকার্যকর, তার বিরুদ্ধে যেহেতু কয়েকটি ফৌজদারি মামলা এবং আর্থিক অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, সেহেতু ডব্লিউএইচওকে জানানো হয়েছে তার মাধ্যমে যাতে যোগাযোগ করতে না হয়, বাংলাদেশ যাতে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সেজন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।”
শফিকুল আলম বলেন, “এখানে বিষয়টা নৈতিক, তার (সায়মা) বিরুদ্ধে আর্থিক ‘অপরাধ’ এবং অন্যান্য কিছু অপরাধে তাকে ‘অভিযুক্ত’ করা হয়েছে। তার ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিএফআইইউ তদন্ত করছে। সেক্ষেত্রে তার মাধ্যমে আমাদের কাজ করার প্রশ্নই ওঠে না।”
এ বিষয়ক চিঠি এরই মধ্যে ডব্লিউএইচওকে পাঠানো হয়েছেও বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল একজন প্রখ্যাত অটিজম বিশেষজ্ঞ। তিনি ২০২৩ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। অটিস্টিক শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সায়মা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য। তিনি একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত মনোবিজ্ঞানী।
১৯৯৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল মনস্তত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন সায়মা ওয়াজেদ। স্কুল মনস্তত্বে বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি অর্জন করেন ২০০৪ সালে। ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তার গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার একাডেমি অব সায়েন্স কর্তৃক শ্রেষ্ঠ সায়েন্টিফিক উপস্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত হয়।
তিনি ২০০৮ সাল থেকে শিশুদের অটিজম এবং স্নায়ুবিক জটিলতাসংক্রান্ত বিষয়ের ওপর কাজ করছেন। স্বীকৃতিস্বরুপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক ২০০৪ সালে হু অ্যাক্সিলেন্স পুরস্কারে ভূষিত হন।