মন ও শরীর ভালো রাখার জন্য ১০ ক্যাম্পাসে মজার আয়োজন

পড়াশোনার চাপ তো আছেই, আছে আরও নানা চাপ। শারীরিক বা মানসিক হয়রানি, বুলিং, এমনকি যৌন হয়রানি পর্যন্ত। বন্ধুদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে না পারা, মিশতে না পারা, ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা।
বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষার্থীদের শরীর-মন ভালো রাখতে তাই ‘ইয়ুথ ওয়েলনেস ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’ আয়োজন করেছে ঢাকা ফ্লো। এই সংস্থা মূলত শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে। ১৩ এপ্রিল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের প্রথম পর্ব। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ ৪ মে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবটি শেষ হবে।
মোট ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শরীর ও মন ভালো রাখার নানা উপায় নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছে আয়োজকেরা। নর্থ সাউথ ও ইস্ট ওয়েস্টের কথা তো আগেই বলেছি। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সাল কলেজ বাংলাদেশ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।
শরীর ও মন ভালো থাকলে জীবনের অর্ধেক সমস্যা এমনিই কমে যায়, মনে করেন ঢাকা ফ্লোর অপারেশন অফিসার ফারিসা রহমান। তিনি বলেন, ‘সমস্যা হলে সেটার সমাধান করতে হবে। যেভাবেই হোক নিজেকে ভালো রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগামীর ভবিষ্যৎ। তাঁরা সুস্থ, সুন্দর আর ভালো না থাকলে পুরো সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
তাই ‘ভালো থাকবে তরুণেরা, সুস্থ শরীর ও সুন্দর মন নিয়ে তারা এগিয়ে যাবে নিজ নিজ স্বপ্নের দিকে’—এই প্রত্যয়ে ক্যাম্পাসগুলোতে আয়োজন করা হয় শারীরিক, মানসিক ও আবেগীয় সুস্থতাবিষয়ক মজার সব অধিবেশন। শারীরিক সুস্থতার জন্য শেখানো হয় যোগব্যায়াম, জুম্বা নাচ ও আত্মরক্ষার নানা কৌশল। বিভিন্ন পর্বে শিক্ষার্থীদের যোগব্যায়ামের অধিবেশনে নেতৃত্ব দেন ইমান আহমেদ। জুম্বার তালে শরীরচর্চা করান ঢাকা ফ্লোর কোরিওগ্রাফার হাফসা ইব্রাহিম।
উৎসবজুড়ে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে মানসিক সুস্থতার ওপর। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই ছিল মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শের ব্যবস্থা। দলগত কাউন্সেলিং সার্কেলে বসে একে অপরের সঙ্গে মতবিনিময় করেন শিক্ষার্থীরা। মানসিক স্বাস্থ্য, ক্ষমতায়ন কর্মশালা, আত্মপরিচয়, সহনশীলতা ছাড়াও নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ শিশু মনোবিদ সালমা ইকরাম।
ভিন্ন ভিন্ন ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পর্বে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক শামেরান আবেদ, তুরাগ অ্যাকটিভের প্রতিষ্ঠাতা ফাইয়াজ রহমান, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তারা ছাড়াও আরও অনেকে।
ঢাকা ফ্লোর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সাজিয়া ওমর বলেন, ‘আমরা এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সাহায্য চাওয়া স্বাভাবিক, ফলে থেরাপি নেওয়াকে কেউ খারাপ মনে করবে না। তরুণেরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে সুস্থ থাকার যাত্রাকে নিজের করে নিতে পারবে।’
উৎসবের পৃষ্ঠপোষক ছিল অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও টেকনো ড্রাগস লিমিটেড।
তথ্য: প্রথম আলো